মানুষের জীবন ধ্বংস করতে অনেক ভয়াবহ রোগের আবিস্কার হয়। মানুষ এই সকল রোগ থেকে বাচার চেস্টা করে আসছে অনেক আগে থেকে। সুন্দর জীবনযাপনের জন্য এই সকল সমস্যা মোকাবেলা করে এগিয়ে গিয়েছে মানবসভ্যতা। সারা বিশ্বের সকল মানুষের একটা ভীতির কারন এই ঘাত রোগ এইডস। ভারত ও মিয়ানমারে প্রকট আকার রুপ নিচ্ছে। সরকার এই কারনে অনেক পদেক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশ ২০১৮ সালে মোট এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৯১ জন। ২০১৯ সালে এখনও পরিসংখ্যান করা হয়নি। ৯১ জন থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। এইডস বিস্তারের অনেক উপায় থাকার কারনে ক্রমেই মানুষ এই মরন ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এইচআইভি ভাইরাসের কারনে এই এইডস হয়ে থাকে। এইচআইভি কি?
এইচআইভি (HIV)
এইডস রোগের সৃষ্টিকারি ভাইরাসের নাম এইচআইভি। বিভিন্ন উপায়ে এই ভাইরাস মানদেহে প্রবেশ করে কোষের কার্যকারিতা নষ্ট করে ফেলছে। ফলে দেহের ভিতরে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা নষ্ট করে ফেলে। এই এইচআইভি ভারাসের কারনে যে রোগের সৃষ্টি হয় তাকেই এইডস বলে থাকে। এইচআইভি নামের পূর্ণ্নাম নাম হল- Human Immuno deficiency virus(HIV),
এইডস( AIDS)
এইচআইভি ভাইরাসের কারনে এইডস মরনব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। এইডস পুরো নাম ইংরেজিতে Acquired Immune Deficiency Syndrome (AIDS)। এই রোগের সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকার অনেক আগে থেকে সর্তক থাকার আহবান জানিয়েছেন। এই রোগের বিস্তার অনেক মাধ্যমে হয়ে থাকে।এইডস রোগের প্রতিরোধে করনীয়। ১৯৮১ সালে আমেরিকা প্রথম এইডস রোগের সনাক্ত করেছেন। যেহেতু এইডস নিরাময়ে কোন ঔষধ আবিস্কার হয় নাই, তাই একে মরনব্যাধি বলা হয়।
এইডসের লক্ষনসমূহ
এইডস রোগের কোন সুনিদিষ্ট লক্ষন নেই। তবে এইডস আক্রান্ত ব্যক্তি যে সকল রোগে আক্রান্ত হতে পারে সেগুলো হলঃ
- কোন কারন ছাড়া একাধারে দুইমাসের অধিক সময় ধরে জ্বর থাকলে।
- শরীরের ওজন দ্রুত হ্রাস পেলে। এইডস রোগের পূর্ব শর্ত আরোপ করে থাকে।
- অনেক সময় দেখা যায় আক্রান্ত রোগী দুই মাসের অধিক সময় ধরে পাতলা পায়খানা।
- মানবদেহের লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়চা
- উপরের কারন গুলো ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকজনিত সমস্যা রোগের সৃষ্টি হয়।
সাধারনতভাবে উপরের লক্ষন দিলে প্রাথমিকভাবে এইডস আছে বলে কল্পনা করা হয়। এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
এইডস নিয়ে অনেকেই নানা ধরনের মন্তব্য করে থাকে। এই রোগ এক জ্বিন থেকে অন্য জ্বিনে প্রবাহিত হয়। তাই কোন এইচআইভি রোগের সাথে দৈহিক মিলন করলে, এইডস আক্রান্ত মায়ের দুধ প্রান করলে, এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির সুচ ও সিরিঞ্জ ব্যবহার করলে, রক্ত নিলে এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এইডস ও এইচআইভি রোগের প্রতিরোধে করনীয়।
এইচআইভি ভাইরাস কিভাবে মানবদেহে সংক্রমিত হয়?
এইচআইভি ভাইরাস মানদেহে প্রবেশ করে মরনঘাতক এইডস রোগের সৃষ্টি করে থাকে। এই ভাইরাস মানবদেহে বিভিন্নভাবে বিস্তার লাভ করে থাকে। তরল পদার্থ রক্ত, বীর্ষ, মায়ের দুধ, ও এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির সিরিঞ্জ ব্যবহারের কারনে এইডস হতে পারে।
এইচআইভি সংক্রমনে সুনিদিষ্ট যে সকল কারনে বিস্তার লাভ করে থাকে তার সেগুলো হলঃ
১) রক্ত জীবন বাঁচনের জন্য অপরিসীম। আবার এই রক্ত মানব জীবনের সর্বনাশ ঢেকে নিয়ে আসে। অনেক বিভিন্ন দুর্ঘটনার কারনে রোগীর রক্তের প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই রক্ত নেয়ার সময় যদি দাতার রক্তে এইচআইভি ভাইরাস থাকে তাহলে সহজেই সেটা অন্য দেহে সঞ্চালন হয়ে থাকেন। তাই রক্ত নেয়ার সময় এবং দেয়ার সময় রক্তে এইচ আইভি ভাইরাস আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করে নিতে হবে।
২) অন্যের ব্যবহুত সুচ ও সিরিঞ্জ ব্যবহার করলে এইডস রোগের সম্ভাবনা থাকে। তাই সবসময় নতুন সুচ ও সিরিঞ্জ ব্যবহার করা উচিত।
৩) এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির কোন অঙ্গ, একজন সুস্থ মানুষের দেহে স্থাপন করলে এইডস রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
৪) গর্ভবতী মা এইডস রোগে আক্রান্ত থাকলে সন্তান সেই মায়ের দুধ প্রান করলে শিশুর এইডস হয়ে থাকে। এই বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে।
৫) এইডস রোগে আক্রান্ত হওয়ার মধ্যে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক। বিশ্বের বিভিন্ন দেহে অবাধে মিলামেশার ফলে এই রোগের বিস্তার লাভ করছে দ্রুত। সাধারনত জনসংখ্যা অনেক বেশি, অশিক্ষিত, দারিদ্রতার কারনে এইডস রোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটাকে প্রতিরোধ করতে এইডস বিষয়ে জনসেচেতনা সৃষ্টি করতে হবে, যৌনপল্লীতে এই বিষয়ে বিভিন্ন ক্যাম্প করতে হবে। একই পুরুষ ও মহিলা একাধিক পুরুষ ও মহিলার সাথে এই ধরনের অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে এই রোগের বিস্তার রোধ করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে।
এইচআইভি ভাইরাস আক্রমের ফলে একটা দেশের জনগন দারুনভাবে প্রভাবিত হয়ে থাকে। দেশের স্বাস্থ্যখাত হতে হবে সবল এবং এই বিষয়ে যথেষ্ঠ জনসচেতনামূলক কার্যকম চালু থাকতে হবে। ভাইরাস রোগের কারনে জাতির দুর্বিসহ দিন গগনা করতে হবে। রক্ত দেয়া-নেয়ার সময়, অন্যের ব্যবহারের সুচ-সিরিঞ্জ, এইডস আক্রান্ত মায়ের দুধ শিশুদের সেবন ও অনৈতিক শারীরিক সম্পর্ক থেকে দূরে থাকতে হবে।
এইডস আক্রান্ত ভাইরাস এইচআইভি প্রতিরোধে করনীয়
এইচআইভি ভাইরাস প্রতিরোধের যে সকল প্রাথমিকভাবে গ্রহন করা যেতে পারে তার মধ্যে অন্যতমঃ-
- পরিক্ষাব্যতিত অন্যের রক্ত গ্রহন করা যাবে না।
- অন্যের ব্যবহারকৃত জিনিস যেমন রেজার, ব্লেড, সিরিঞ্জ ইত্যাদি ব্যবহার থেকে বিরত থাকে হবে।
- অনৈতিক, অনিরাপদ, অনিয়ন্ত্রিত শারীরিক সম্পর্ক করা যাবে না।
- অপারেশন থিয়েটারে নতুন যন্ত্রপারি ব্যবহার করতে হবে।
- শিশুকে এইডস আক্রান্ত মায়ের দুধ পান করতে দেয়া যাবে না।
Discussion about this post