মানবদেহের ত্বক অনেক জটিল প্রকৃতির। যা সমস্ত শরীরকে ঢেকে রাখে।
ত্বক তিনটি কাজ করে থাকে প্রধানত।
- দেহকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করে।
- অভ্যন্তরীন গঠনকে রক্ষা কর।
- শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রন করে থাকে এবং অব্যবহুত জিনিস বর্জন করে থাকে।
ত্বকের স্বাভাবিক কাজের কোন বিঘ্ন ঘটলে ত্বকে নানা ধরনের রোগের সৃষ্টি হয়ে থাকে। যে সকল ত্বকে তৈলাক্তের পরিমান অনেক বেশি সেই সকল ত্বকে বেশি ব্রন দেখা যায়। মেয়েদের ত্বকের নীচে চর্বি বা তেল বেশি থাকে। হরমোনের পরিবর্তনের হয়ও বেশি। এই কারনে মেয়েদের খাদ্যাভাসের উপর নির্ভর করে ব্রনের প্রকট কম বা বেশি দেখা যায়। ব্রনে খাদ্যাভাস কেমন হওয়া দরকার সেই বিষয়ে আলোকপাত করা হবে।
ব্রনে খাদ্যাভাস পরিহার ?
যে সকল খাদ্য আমাদের ত্বকের জন্য এবং ব্রনের জন্য খারাপ তা পরিত্যাগ করতে হবে।
- ভুল খাদ্যাভাস, অনিয়মিত আহার গ্রহন, অনুপযোগী খাবার, অত্যাধিক শর্করা, অত্যাধিক চর্বিযুক্ত খাবারের কারনে ব্রন দেখা দিতে পারে। সেই সকল খাবার পরিহার করতে হবে।
- অত্যাধিক চা, কফি, এলকোহল, তামাক গ্রহন করা যাবে না।
- বয়ঃসন্ধিকালে রাত জাগা। অনেক সময় বসে থাকার ফলে বদহজম, সাধারন দুর্বলতা ও দুশ্চিন্তা ইত্যাদির কারনে ব্রনের প্রকট দেখা দিতে পারে।
- অধিক মিষ্টি, চর্বি, তেল জাতীয় খাবার গ্রহন না করা।
- ফাস্টফুড বা তেলে ভাজা খাবার গ্রহন না করা। কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে সেটা অবশ্যই দূর করতে হবে।
- পালংশাক ও লেটুস পাতা ব্রনের প্রকট বাড়িয়ে দিয়ে থাকে। এই খাবার গ্রহন করবেন না।
- ক্লোরাইড ও ব্রোমাইডযুক্ত ঔষধ, সামুদ্রিক মাছ, মাঘন, ঘি খাদ্যাভাস ত্বকে ব্রন বাড়িয়ে তোলে বলে জানা গেছে।
ব্রনে খাদ্যাভাস গ্রহন
কিছু কিছু খাবার আছে যে ব্রনকে প্রতিরোধ করে থাকে। প্রতিরোধের পাশাপাশি প্রতিকারও করে থাকে। জীবনযাত্রার মান পরিবর্তনের কারনে অনেক সময় ব্রনের সমস্যা দূর হয়ে থাকে। ব্রনে খাদ্যাভাস চার্ট মেনে চললে ব্রন একবারে চলে যাবে ঠিক না। তবে অনেকটা সুস্থ রাখতে সহায়তা প্রদান করবে।
- দিনে ১০-১৫ গ্লাস জল পান করতে হবে। তেল-ঝাল-মসলাহীণ খাদ্য গ্রহন করা উচিত।
- কাঁচা সবজি, অংকুরিত ছোলা, ডাল, কাঁচা বাদাম, খুবই উত্তম।
- লেবুর পানি, তাজা ফলে রস, আপেল, নাশপাতি, আঙুর, আনারস ইত্যাদি ভাল উপকার করে থাকে।
- ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহ করা প্রয়োজন। গাজর, কুমড়া, পেঁপে, পুঁইশাক, ও সেকোন রঙিন ফল ও সবজিতে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে।
- কাঁচা ও টক জাতীয় যেকোন ফলে ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে।
- ব্রন সারাতে খনিজ লবনের সাথে জিংক, ভিটামিন ‘ই’ ভিটামিন ‘বি-৬’ ভালো কাজ করে। এই জন্য খেতে হবে, শস্যজাতীয় ফসল, মাছ, ডিম, তেল, মুলাজতীয় ফসল, মসুর ডাল, গরুর কলিজা ব্রনের প্রকট থেকে ত্বককে রক্ষা করে থাকে।
এ ধারনা ঠিক নয় যে, এই ধরনের ব্রনের খাদ্যাভাস করলে ব্রন একবারেই হবে না। বলা যেতে পারে, ব্রন হওয়ার আশংকা হ্রাস পাবে। যাদের ব্রন হচ্ছে তাদের নিরাশ হওয়ার দরকার নাই। সঠিক চিকিৎসা ও ব্রনের খাদ্যাভাস মেনে চললে ব্রন থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
Discussion about this post